নমস্কার দর্শক বন্ধুরা অমৃত কথা এই ওয়েবসাইটে আপনাদের জানাই সুস্বাগতম।ভারতীয় দর্শন শাস্ত্র এবং বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজা আর্চনা এই ওয়েবসাইটের প্রধান বিষয়বস্তু ।
আজকে আপনাদের সামনে যে বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করব তা হল- সাবধান হয়ে যান – সংসারে এই তিনটি লক্ষণ দেখা দিলে মা লক্ষ্মী নিশ্চিত রূপে বিদায় নেবেন।।
“এসো-মা-লক্ষ্মী-বসো-ঘরে
আমার ঘরে থাকো আলো করে।”
বন্ধুরা কথায় বলে সংসার সুখের হয় রমনীর গুনে। এই কথাটি যেমন আংশিক সত্য তার পাশাপাশি এর থেকে বড় সত্য হলো সংসার শুধুমাত্র রমনীর গুনে সুখী হয়ে ওঠেনা। সেখানে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সংসার সুখের হয়ে ওঠে। কিন্তু বন্ধুরা মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ ছাড়া কখনোই কোনো সংসার সুখের ও সৌভাগ্য পূর্ণ হয়ে উঠতে পারে না। লক্ষী হলেন আমাদের সংসারের সুখ , শান্তি ও সমৃদ্ধির অধিষ্ঠাত্রী দেবী। তার কৃপা না থাকলে কোন সংসারের সুখ- শান্তি বজায় থাকতে পারে না। যে সংসারে দেবী লক্ষী বসবাস করে সে সংসার হয়ে ওঠে আনন্দের ও সুখের। আর যে সংসারের থেকে মা লক্ষ্মী মুখ ফিরিয়ে নেন বা মা লক্ষী বিরাজ করেন না সেই সংসার অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়ে যায়। সেই সংসারের নেমে আসে ঘোর দুর্যোগ। আজকে এই বিষয়টি নিয়ে এই লেখাটিতে আলোচনা করব।
যদি কোন সংসারে এই তিনটি ঘটনা ঘটে থাকে বা কোনো সংসারে এই তিনটি লক্ষণ যদি ক্রমাগত দেখা যায় তাহলে এই বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত করে যে মা লক্ষ্মী সেই ঘর থেকে চলে যেতে চাইছে এবং সেই সংসারে অবশ্যম্ভাবীরূপে একটা ভয়ঙ্কর বিপর্যয় নেমে আসতে চলেছে। তাই মা লক্ষ্মীর কৃপা থেকে যদি আপনি বঞ্চিত না হতে চান তাহলে এই তিনটি লক্ষণ অতি অবশ্যই আপনাকে জানতেই হবে এবং তার প্রতিকার করার চেষ্টা করতে হবে।
জেনে নিন তিনটি বিষয় সম্পর্কে যার ফলে মা লক্ষ্মী আপনার গৃহ থেকে বিদায় নিতে পারেন
প্রথম লক্ষণ টি হল – যদি কোন সংসারে অন্নের অপমান হয় , অন্য বলতে বোঝানো হয়েছে ভাত। যদি কোন সংসারে ক্রমাগত বারংবার অন্নের অপমান হয়ে থাকে অর্থাৎ অন্নের অনাদর হয়ে থাকে সেই সংসার থেকে মা লক্ষ্মী অতি অবশ্যই চলে যাবেন। এখন যে প্রশ্নটি আসতে পারে সেটি হল – অন্ন বা ভাতের অনাদর কি? কীভাবেই বা অপমান করা হয় অন্নকে? – আমরা ক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য ভাত রান্না করে থাকে অনেক সময় দেখা যায় এই খাবার জেনেশুনে বা অজান্তে অপচয় হয়। অর্থাৎ আমাদের পরিবারের সকল সদস্যদের খাওয়া-দাওয়া হয়ে যাওয়ার পর অনেক সময় হাঁড়িতে ভাত পড়ে থাকে। এই ভাত অনেক সময় নর্দমায় অথবা বাইরে ফেলে দেওয়া হয় একেই বলা হয় অন্যের অপচয়। আবার এইরকম টা অনেক সময় দেখা যায় সংসারের রাগারাগি যখন হচ্ছে তখন কেউ কেউ ভাতের থালা ছুড়ে ফেলে দিচ্ছেন। এটা কেও কিন্তু বলা হয় অন্নের অপমান। এইরকম ঘটনা যদি ক্রমাগত সংসারে ঘটে থাকে তাহলে বুঝতে হবে দেবী লক্ষ্মী সেই সংসারে অত্যন্ত অপমানিত হয়েছে এবং খুব শীঘ্রই তিনি সেই সংসার পরিত্যাগ করতে চেলেছেন এবং সেই সংসারে ভয়ানক দুর্ভোগ নেমে আসতে চলেছে। সুতরাং এ বিষয়ে যথেষ্ট সাবধানতা মেনে চলা প্রয়োজন। সর্বদা একটি জিনিস মাথায় রাখবেন যে আপনি রেগে যান অথবা যেকোনো কারণেই হোক অন্নের উপর কোনো সময় রাগ দেখাবেন না। আমাদের খাওয়ার পর হাঁড়িতে অবশিষ্ট ভাত রয়ে যায় তাহলে সেই ভাতের যথোপযুক্ত ব্যবহার করতে হবে । সেই ভাত নর্দমায় না ফেলে বা বাইরে না ফেলে কোন পশু পাখিকে বা কোন গরীব দুঃখীকে খেতে দিন।
দ্বিতীয় বিষয়টি হলো – যে সংসারে কথায় কথায় দ্বন্দ্ব ঝগড়াঝাটি লেগেই থাকে সেই সংসারে এই বিষয়টি কিন্তু ইঙ্গিত বহন করে যে সেই সংসারে ঘোর দুর্দিন এগিয়ে আসছে। অনেক সময় দেখা যায় সামান্য ঝগড়াকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র ঝগরা শুরু হলো এবং সেই ঝগড়ার রেস দীর্ঘদিন ধরে রইলো। এরকমটা যদি কোনো সংসারে বারবার হতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে দেবী লক্ষ্মীর কৃপা সেই সংসার থেকে সরে যাচ্ছে। সংসারে থাকতে হলে ছোটখাটো ঝামেলা হয়েই থাকে কিন্তু তা যদি প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে তাহলে বুঝতে হবে দেবী লক্ষ্মী সেই সংসার থেকে বিদায় নিয়েছে। সুতরাং যখনই এই বিষয়টি দেখা দিচ্ছে তখনই সাবধান হতে হবে। কোনো এক পক্ষকে ঝামেলা মিটিয়ে নিতে হবে।এই ঝগড়াঝাটি ঝামেলা এগুলো যদি মিটিয়ে নেওয়া না হয় তাহলে সেই সংসারে ঘর দুর্ভোগ নেমে আসে।
এরপর আসবো তৃতীয় বিষয়টিতে – এই ঘটনাগুলো বাড়িতে প্রতিনিয়ত যদি দেখা যায় তাহলে নিশ্চিত ভাবে ধরে নিতে হবে মা লক্ষ্মী সেই বাড়ি থেকে বিদায় নিয়েছেন। বাড়ির বয়স্ক কোন ব্যক্তিকে যদি ক্রমাগত অবজ্ঞা বা অপমান করা হয়ে থাকে তাহলে নিশ্চিত রূপে সেই গৃহ থেকে মা লক্ষ্মী বিদায় নেবেনই নেবেন। অনেক সময় দেখা যায় সন্তান বড় হওয়ার পরে মা-বাবাকে দেখেনা। এটা তারা ভুলে যায় তারাও এক সময় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা হবে। তারাও একদিন সেই জায়গায় গিয়ে পৌঁছবে । তারা আজ যা করছে তার প্রতিফল একদিন নিশ্চিত রূপে পাবে। কারণ তারা যা করছে তাদের দেখে তাদের সন্তানরা তাই শিখছে। তাই তাদের ওরকম বয়স্ক অবস্থাতে তাদের সন্তানরা তাদের সাথেও রকম আচরণ করবে। তাই কোন সংসারে যদি বাড়ির বয়স্ক বা বড়দেরকে অসম্মান, অবজ্ঞা করা হয় তাহলে সেই সংসার থেকে মা লক্ষ্মী বিদায় নেবেনই নেবেন।
বন্ধুরা আপনার আশেপাশে এই তিনটি ঘটনা আপনারা হয়তো প্রায় লক্ষ করেন। দেখবেন খুব শীঘ্রই সেই সংসার থেকে মা লক্ষ্মীর বিদায় নিতে চলেছেন। আর যদি আপনার ক্ষেত্রে এই তিনটি ঘটনার মধ্যে কোন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে এখন থেকেই সাবধান হয়ে যান।
ভাল থাকুন , সুস্থ থাকুন ।
নমস্কার, ধন্যবাদ।।
ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুক।